earthquake in bangladesh essay লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
earthquake in bangladesh essay লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৮

চরম ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

ভুগাঠনিক/টেকটনিক বৈশিষ্ট্য: বাংলাদেশ ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলে বংগোপসাগরের মাথায় অবস্থিত। টেকটনিক্যালি বাংলাদেশ ভারতীয় প্লেটের উত্তরপূর্বাঞ্চলে এবং তিনটি প্লেটের (ভারতীয় প্লেট,ইউরোসিয়ান প্লেট এবং বার্মিজ মাইক্রোপ্লেট)-এর সংযোগ¯হলে অবস্থিত। এই তিনটি প্লেট দুটি প্লেট বাউন্ডারী উৎপন্ন করেছে । ভারতীয় প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেট বাউন্ডারী উত্তরে হিমালয় আর্ক এবং ভারতীয় ও বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) প্লেট বাউন্ডারী পূর্বে বার্মা আর্ক উৎপন্ন করেছে । ভারতীয় প্লেটটি বছরে ৬ সে.মি উত্তরপূর্ব দিকে সরে আসছে এবং যথাক্রমে উত্তরে ইউরেশিয়ান (৪৫ মি.মি/বছর) এবং পূর্বে বার্মিজ প্লেটের (৩৫ মি.মি/বছর)নীচে ঢুকে পড়ছে। ক্রমাগত এই গতির ফলে সক্রিয় ফল্ট তৈরী হয়েছে। একটি  ফল্ট ভারতীয় এবং ইউরেশিয়া বাউন্ডারীতে (হিমালয়ের পাদদেশে) আটকে আছে (১৯৩৪ সাল থেকে)। এই ফল্ট জোনে প্রচন্ড শক্তি সঞ্চয় হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে প্রচন্ড শক্তির তান্ডবে ফল্টটি সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে অথাৎ বড় মাত্রার ভুমিকম্পের আশংকা রয়ে গেছে।

সক্রিয় ফল্টেসমুহের কারনে ( রিজনাল স্কেলে) জন্য বাংলাদেশ ও এর আশে পাশের অঞ্চল মাঝারী থেকে তীব্র ভুমিকম্পের ঝুকিতে রয়েছে। সক্রিয় ফল্টগুলোর মধ্যে রয়েছে ডাউকী ফল্ট, যা পূর্ব-পশ্চিমে  প্রায় ৩০০ কি.মি পর্যন্ত বিস্তত এবং শিলং মালভুমির(মেঘালয়-বাংলাদেশ সীমানা)  দক্ষিনপ্রান্তে অবস্থিত। মধুপুর ফল্ট যা উত্তর-দক্ষিণে ১৫০ কি.মি পর্যন্ত বিস্তৃত এবং মধুপুর গড় ও যমুনা প্লাবন সমতলভুমির মাঝে অবস্থিত। আসাম-সিলেট ফল্ট যা উত্তরপূর্ব থেকে দক্ষিণপশ্চিমে প্রায় ৩০০ কি.মি পর্যন্ত বিস্তৃত এবং সুরমা বেসিনে অবস্থিত। চট্টগ্রাম-মিয়ানমার প্লেট বাউন্ডারী ফল্ট যা চট্টগ্রাম-মিয়ানমার সৈকতের সমান্তরালে প্রায় ৮০০ কি.মি পর্যন্ত বিস্তত।

চিত্র: বাংলাদেশের অব ও টেকটনিক বৈশিষ্ট্য

তাছাড়া বঙোপসাগরে চারটি সক্রিয় উৎসের কারনে রিক্টারস্কেলে ৭ মাত্রারও অধিক শক্তিশাত্রার সুনামীর আশংকাও রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কতৃক তৈরীকৃত ভুমিকম্পনপ্রবন এলাকার মানচিত্র বা সিসমিক জোনিং মানচিত্রে বাংলাদেশের ৪৩ ভাগ এলাকা উচ্চ ঝঁকিপূর্ণ অঞ্চল (জোন-১), ৪১ ভাগ মাঝারী ঝুকিপূণ অঞ্চল (জোন-২) এবং বাকী  ১৬ ভাগ কম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল (জোন-৩) হিসাবে চিহিত করা হয়েছে।

জোন-১ : পঞ্চগড়,রংপুর,গাইবান্ধা,কুড়িগ্রাম,জামালপুর,শেরপুর,ময়মরসিংহ,নেত্রকোনা,সুনামগঞ্জ,কিশোরগঞ্জ,মৌলভীবাজার,সিলেট,হবিগঞ্জ,ব্রাক্ষণবাড়িয়া,ঠাকুরগাঁও-এর কিছু অংশ,সিরাজগঞ্জ,টাঙাইল,রাঙামাটি,খাগড়াছড়ি এবং কক্সবাজার।

জোন-২
রাজশাহী,নাটোর,মাগুরা,মেহেরপুর,কুমিল্লা,ব্রাক্ষণবাড়িয়া,ফেনী এবং ঢাকা

জোন-৩
বাংলাদেশের সব দ্বীপ এবং চর অঞ্চল। বরিশাল এবং পটুয়াখালী ।
( সুত্র: ডেইলি স্টার, আগষ্ট ১১,২০০৯)

বাংলাদেশে ভুমিকম্পের কারণ:  বাংলাদেশ ও এর আশেপাশে যে ভুতাত্ত্বিক চ্যুতি বা ফল্টসমুহ সক্রিয় রয়েছে,সেগুলোর নড়াচড়া ফলে বিভিন্ন মাত্রার ভুমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ ও এর আশেপাশের অঞ্চলসমূহ। সক্রিয় ফল্ট জোনগুলো  হলো-

(১)    বগুড়া ফল্ট জোন
(২)    রাজশাহীর তানো ফল্ট জোন
(৩)    ত্রিপুরা ফল্ট জোন
(৪)    সীতাকুন্ড-টেকনাফ ফল্ট জোন
(৫)    ডাউকি ফল্ট জোন (হালুয়াঘাট ফল্ট)
(৬)    ঢুবরী ফল্ট জোন
(৭)    চটগ্রাম ফল্ট জোন
(৮)    শাহজীবাজার ফল্ট জোন  (আংশিক ডাউকি ফল্ট) এবং
(৯)    রাঙামাটি ফল্ট জোন (বরকল)