earthquake লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
earthquake লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৮

ভূমিকম্প

ভূমিকম্প একটি বির্পযয়। ভু-ত¦কের নীচে প্রচন্ড শক্তি সঞ্চিতথাকে। এই শক্তি যখন ভূ-পৃষ্ঠে হঠাৎ অবমুক্ত হয়, তখন ভু-পৃষ্ট প্রচন্ড জোরে কেঁপে উঠে। ভূ-পৃষ্ঠের এই হঠাৎ কেঁপে উঠাকে ভূমিকম্প বলে।
উইকিপিডিয়ার বাংলা সংস্করণে ভূমিকম্পের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা নি¤œরুপ:

ভূ-অভ্যন্তরে শিলায় পীরনের জন্য যে শক্তির সঞ্চয় ঘটে,সেই শক্তির হঠাৎ মুক্তি ঘটলে ভূ-পৃঠে ক্ষনিকের জন্য কেঁপে ওঠে এবং ভূ-ত্বকের কিছু অংশ আন্দোলিত হয়। এইরুপ আকস্মিক ও ক্ষন¯হায়ী কম্পনকে ভূমিকম্প বলে।

ভুমিকম্পের কারণ : ভুমিকম্পের কারণ বহুবিধ হতে পারে।
১.    ভূ-ত্বকে ফল্ট বা চ্যুতি ।
২.    আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুপাত।
৩.    পাহাড়ধস এবং ভুমিধস ।
৪.    তাপ বিকিরন
৫.    ভূগর্ভˉহ বাষ্প
৬.    হিমবাহের প্রভাব
৭.    ভ’-পৃষ্টে
বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ বা বোমার কার্যকারীতা পরীক্ষা।
৮.    ভু-গর্ভ¯হ খনিতে কৃত্রিম
বিস্ফোরণ ইত্যাদি।

১ থেকে ৬ নম্বর কারণগুলি প্রাকৃতিক এবং বড় মাত্রার ভুমিকম্পের সৃষ্টি করে। ৭ ও ৮ নং কারণগুলি  মানুষের সৃষ্টি এবং ছোট থেকে মাঝারী মাত্রার ভুমিকম্পের উৎপত্তি করে। পৃথিবীর বড় বড় ভুমিকম্প(প্রায় ৮০%)-এর পেছনে রয়েছে ফল্ট বা চ্যুতি দিয়ে অকল্পণীয় শক্তির হঠাৎই অবমুক্তি। এই ফল্ট বা চ্যুাতি কি এবং কিভাবে তা ভূমিকম্পের সাথে সম্পর্কীত তা বুঝতে হলে, আমাদের প্রথমেই আলোচনা করতে হবে- পৃথিবীর স্তরবিন্যাস, প্লেট টেক্টটনিক তত্ত্ব এবং ফল্টের উৎপত্তি ও প্রকারভেদ।

পৃথিবীর স্তরবিন্যাস:
পৃথিবীকে প্রধানত চারটি স্তরে ভাগ করা হয়ে থাকে-
১.    ক্রাস্ট বা কঠিনত্বক ।
২.    ম্যান্টেল।
৩.    আউটর কোর বা
বহি: স্থ মূল ।
৪.    ইনার কোর বা  অন্ত:মুল ।


ক্রাস্ট : পৃথিবীর উপরের দিকে  কঠিন আবরনকে ক্রাষ্ট বলে। এই ক্রাষ্ট আবার দুটি অংশে বিভক্ত। কন্টিন্টোল ক্রাস্ট বা মহাদেশীয় কঠিনত্বক এবং ওসোনিক বা মহাসাগরীয় কঠিন ত্বক। পৃথিবীর ক্রাষ্টের ৭১ শতাংশই মহাসাগরীয় ক্রাস্ট আর বাকী ২১ শতাংশই মহাদেশীয় ক্রাষ্ট। মহাদেশীয় ক্রাষ্ট আগ্নেয়শিলা যেমন গ্রানাইট দ্বারা গঠিত এবং মহাসাগরীয় ক্রাষ্ট পাললিক এবং ব্যাসাল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। মহাদেশীয় কঠিনত্বকের গড় ঘনত্ব ৩গ্রাম/সে.মি  অন্যদিকে মহাসাগরীয় কঠিনত্বকের গড় ঘনত্ব ২.৯গ্রাম/সে.মি। ক্রাস্টে তাপমাত্রা ২০০-৪০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। মহাদেশের নীচে ক্রাস্টে পুরুত্ব প্রায় ৬০ কি.মি এবং মহাসাগরের নীচে ক্রাস্টে পুরুত্ব ৫ কি.মি। এই ক্রাস্ট সদা সঞ্চারণশীল। ট্যাকটনিক প্লেট (অন্যত্র আলোচনা করা হয়েছে) এই স্তরেই বিদ্যমান । গাছ পালা, পাহাড়-পর্বত,নদী সবই ক্রাস্টের উপর অবˉিহত।

ম্যান্টেল : পৃথিবীর ২য় স্তর। ক্রাস্টের নীচেই এর অবˉহান। এই সÍর দুটি অংশে বিভক্ত- লিথোসস্ফেয়ার বা শিলামন্ডল এবং স্থানোসস্ফেয়ার । সকল স্তরের চেয়ে ম্যান্টেল স্তরের আয়তন বেশী। এই সÍর ১৮০০ মাইল বা ২৯০০ কি.মি গভীর।

(ক) লিথোসস্ফেয়ার বা শিলামন্ডল : এই স্তর পাথুরে স্তর। নিরেট ও শক্ত। লিথোসস্ফেয়ার-এর তাপমাত্রা ৩০০ থেকে ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বিদ্যমান। এই স্তরের সঞ্চারণের ফলে ভু-ত¦কে পরিবর্তণ সাধিত হয়। এই সঞ্চারণ দ্ইু ধরনের-ধীর (পাহাড়-পর্বতের উৎপত্তি, সাগরের বেসিন) এবং এবং দ্রত   ( আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যূৎপাত)। লিথোসস্ফেয়ার প্রায় ১২টি খন্ডাংশ (প্লেট) নিয়ে গঠিত এবং প্লেটগুলো স্থানোসস্ফেয়ার-এ ভেসে চলে।

(খ)
স্থানোসস্ফেয়ার বা দুর্বলস্তর: এই স্তরে পাথরগুলো মুলত প্রচšড তাপে গলিত বা অর্ধ-গলিত অব¯হায় থাকে। পাথরের কোন কাঠিন্য থাকে না।স্থানোসস্ফেয়ার-এর তাপমাত্রা ৪৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি।প্রচন্ড তাপ ও চাপের প্রভাবে পাথর এখানে গলিত বা অর্ধ-গলিত অবˉহায়   ( অনেকটা আলকাতরার ন্যায়)বিরাজ করে ।


আউটর কোর বা বহি:¯হ মূল: এই স্তরটি তরল এবং পুরুত্ব ২৩০০ কি.মি। ম্যান্টাল এবং ক্রাস্ট-এর তুলনায় এই স্তরের ঘনত্ব অনেক বেশী। ঘনত্ব ৯,৯০০ থেকে ১২,২০০ কেজি/প্রতি ঘন মিটার। এই আউটার কোরের আশি শতাংশই লোহা এবং বাকী বিশ শতাংশই নিকেল এবং হাল্কা উপাদানে গঠিত। আউটার কোরের বাইরের দিকে তাপমাত্রা ৪০৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং ভিতরের দিকে ( ইনার কোরের সন্নিকটে) এই স্তরের তাপমাত্রা ৫,৭৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

ইনার কোর বা অন্ত:মুল: এই স্তরটি নিরেট বা কঠিন। নিকেল এবং লোহা দ্বারা গঠিত। এই স্তরের ব্যাসার্ধ ১,২২০ কি.মি। ঘনত্ব ১২,৬০০-১৩,০০০ কি.মি/ঘন মিটার-যা থেকে বোঝা যায় এই স্তরে উল্লেখ্যযোগ্য পরিমানে ভারী ধাতু যেমন সোনা,প্লাটিনাম,পেলাডিয়াম,সিলভার এবং ট্রাংস্টেন আছে। এই স্তরের তাপমাত্রা প্রায় ৫,৪০০ ডিগী সেন্টিগ্রেড। 




প্লেট টেক্টটনিক তত্ত¦ এবং ভুমিকম্পের উৎপত্তি: পূর্বেই আলোচনা করা হয়েছে যে, পৃথিবীর ক্রাস্ট লিথোসস্ফেয়ার এবং আস্থানোসস্ফেয়ার নিয়ে গঠিত। লিথোসস্ফেয়ার আসলে ১২টি মুল খন্ত এবং বেশকিছু খন্ডাংশ নিয়ে গাঠত। এই খন্ডগুলো আস্থানোসস্ফেয়ার-এ সঞ্চারণশীল। এই সঞ্চারনের গতি বছওে ২-৩ সে.মি। এই সদা সঞ্চারণশীল খন্ড গুলোকে প্লেট বলা হয়। নিচের চিত্রে প্লেটগুলোর অব¯হার দেখানো হলো:



প্লেটগুলো ম্যান্টেলের গলিত ম্যাগমার উপর ভাসে। এই গলিত ম্যাগমায় পরিচলন ¯্রােত বা কনভেকশন কারেন্ট-এর জন্য প্লেটগুলো ধীরে ধীরে বিভিন্ন দিকে সঞ্চারিত হয়। কোর-এর তাপমাত্রার জন্য ম্যান্টেল উক্কপ্ত হয়। উত্তপ্ত শিলা ধীরে ধীরে ক্রাস্টের দিকে উঠতে থাকে এবং তাপ হারাতে থাকে। এই উত্তপ্ত শিলা যখন ক্রাস্টের কাছাকাছি আসে তখন তা উপরের শক্ত পাহুরে স্তর ভেদ করতে পারে না বিধায় একপাশে সরে আসে। ক্রাস্টের নিকটে আসার ফলে এই উক্কপ্ত শিলা আরো শীতল হয়ে পড়ে এবং ওজনে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়ে পুনরায় আউটার কোরের দিকে নামতে থাকে। আউটার কোরে যখন এই শীতল শিলা এসে পড়ে, তখন তা আউটার কোরের নিরেট নিকেল/লোহার স্তর ভেদ করতে পারে না ।  এ পর্যায়ে এই শীতল শিলা পুনরায় উত্তপ্ত হয় এবং উপরের ক্রোরের দিকে উঠতে থাকে। উক্কপ্তকরণ, উত্তোলন, শীতলীকরণ এবং ডুবে যাত্তয়া-এই চারটি প্রক্রিয়া ম্যাগমায় এক ধরনের ¯্রােতের উৎপত্তি করে, যা পরিচলন ¯্রােত বা কনভেক্শন কারেন্ট নামে পরিচিত।


পরিচলন ¯্রােত-এর কারনে প্লেটগুলো একটির সাথে আরেকটি পেটের সংর্ঘষ ঘটে। আবার একটি প্লেট অপর প্লেট থেকে দুরে সরে যায়। দুটি প্লেট যে সীমানায় সংর্ঘষ করে বা যেখান থেকে বিছিন্ন হয়, সেই সীমানাতেই ভুমিকম্প,আগ্নেয়গিরির অগ্নুঃপাত, পাহাড়-পর্বতের উৎপত্তি এবং মহাসাগরীয় ট্রেন্চ  বা খাদ সৃষ্টি হয়। প্লেট বাউন্ডারী বা সীমানা তিন রকমের:

১.কনভারজেন্ট বা অভিসারী সীমানা: যে সীমারেখা বরাবর দুটি প্লেট-এর সংর্ঘষ ঘটে। (১) যখন দুটি মহাদেশীয় প্লেট পরষ্পরের সাথে যে সীমারেখা বরাবর ধাক্কা খায়, সে সীমারেখা বরাবর ভু-ত্বকে ভাঁজ সৃষ্টি হয় এবং পর্বতমালা সৃষ্টি হয়। ভারতীয় প্লেট এবং এশিয়ান প্লেটের সংর্ঘষের ফলে ৫৫ মিলিয়ন বছর আগে হিমালয় পর্বতমালার সৃষ্টি হয়। আবার যখন ওশানিক(মহাসাগরীয়)প্লেট মহাদেশীয়(কন্টিন্টোল)প্লেটের নীচে ঢুকে পড়ে,তখন সাবডাকশন জোন সৃষ্টি হয়।  মহাদেশীয় প্লেটটি উপরের দিকে উঠতে থাকে এবং এক পর্যায়ে পর্বতমালা সৃষ্টি করে। অন্যদিকে মহাসাগরীয় প্লেটটি গলতে থাকে যা আগ্নেয়গিরির অগ্যূৎপাত মাধ্যমে চারদিকে বিক্ষিপ্ত হয়। উদাহরণ- দক্ষিণ আফ্রিকার আ›্রজি পর্বতমালার কিছু পর্বত।

(২) দুটি মহাসাগরীয় ( ওশোনিক) প্লেট যখন ধাক্কা খায় তখন একটি প্লেট আরেকটি প্লেটের নীচে ঢুকে পড়ে এবং গভীর খাদ বা ট্রেন্চ সৃষ্টি হয়। উক্কও প্রশান্তমহাসাগরে ম্যারিয়ানা ট্রেন্চটির ( পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরতম পয়েন্ট) উৎপত্তি হয়েছে এইভাবেই। অনেকসময় মহাসাগরীয় প্লেটের সংর্ঘষের ফলে সাগরের নীচে আগ্নেয়গিরি জন্ম হয় এবং লাভা জমে দ্বীপ সৃষ্টি হয় যেমন, জাপান।




ডাইভারজেন্ট বা প্রতিসারী সীমানা : যে সীমারেখায় দুটি প্লেট পরষ্পর থেকে বিচিছন্ন হয় তাকে ডাইভারজেন্ট বা প্রতিসারী সীমানা বলে। ডাইভারজেন্ট বাউন্ডারীকে গঠনমূলক সীমানাও বলা যায়। কারণ, ম্যান্টেল থেকে ম্যাগমা এসে ঠান্ডা হয়ে নতুন ক্রাষ্ট গঠন করে। (১) যখন দুটি ওশানিক বা মহাসাগরীয় প্লেট পরষ্পর থেকে বিছিন্ন হয় তখন সাগরপৃষ্ট প্রসারিত হয় এবং সাগরপৃষ্টে সুগভীর ফাটল দেখা দেয় । ম্যান্টেল থেকে ম্যাগমা এসে এই ফাটল ভরাট কওে এবং সাগরপৃষ্টে দীর্ঘ আগ্নেয়গিরি উৎপত্তি করে। ধীরে ধীরে এই ম্যাগমা শীতল হয়ে আগ্নেয়শিলার  নতুন ক্রাষ্ট গঠন করে। ক্রমাগত ম্যাগমার উধ্ধগতির ফলে ম্যাগমা স্তুপীকৃত আকার ধারন করে এবং মিড ওশানিক রিজ বা মধ্য মহাসাগরীয় শৈলশিরা গঠন করে। উদাহরণ-মিড আটলান্টিক রিজ যা আকটিক মহাসাগর থেকে আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। মিড আটলান্টিক রিজে সাগরপৃষ্টের সম্প্রসারণের ( সি-ফেøার স্প্রেডিং) হার বছরে প্রায় ২.৫ সে.মি।

(২) যখন দুটি মহাদেশীয় প্লেট পরষ্পর থেকে সরে যায় তখন ভুপৃষ্টে ফাটল দেখা দেয়। বিছিন্ন হওয়ার ফলে ক্রাষ্ট ক্রমান্বয়ে প্রসারিত এবং পাতলা হয় এবং বিছিন্ন হওয়ার স্হানে এবং এর আশেপাশে উপত্যকা এবং আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি হয়। রিফ্ট বা ফাটল সৃষ্টিকালে ঝর্ণা এবং নদী নিচু উপত্যকা ভরে ফেলে দীর্ঘ লেক বা হ্রদ সুষ্টি করে। অনেকসময় বিছিন্ন হওয়ার স্হানে ভু-ত্বক এতই পাতলা এবং প্রসারিত হয় যে মুল প্লেট থেকে বিছিন্ন হয়ে সম্পূর্ণ নতুন একটি প্লেট গঠিত হয়। যখন এরকম ঘটে তখন রিফট জোনে কোন একটি সাগর সরে এসে সম্পূর্ণ একটি নতুন সাগর বা ওশান বেসিন গঠিত করে। উদাহরন-পূর্ব আফ্রিকা-যেখানে আরব প্লেট আফ্রিকান প্লেট থেকে সরে যাচ্ছে। এর ফলে সৌদি আরব আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এবং লোহিত সাগরের উৎপত্তি হয়েছে।

ট্রান্সফর্ম বা রুপান্তর সীমানা : যেখানে দুটি প্লেট পরষ্পরকে সমান্তরালে অতিক্রম করে। দুটি প্লেটের অতিক্রান্তের সময় ক্রাষ্টে ফাটল দেখা দেয় এবং এই ফাটলকে ফল্ট বা চ্যুাতি বলে। এই ট্রান্সফরম বাউন্ডারীতেই ভুমিকম্প উৎপন্ন হয়। ট্রান্সফরম বাউন্ডারীতে প্লেটের প্রান্ত খাঁজ কাটা বিধায় এক প্লেট  আরেক প্লেটকে অতিক্রান্তের সময় আটকে যায় এবং সরতে পারে না। ফল্ট লাইন বরাবর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি হতে থাকে। এই চাপ যখন হঠাৎই অবমুক্ত হয়, তখন প্লেট দুটি নতুন কোন অব¯হানের সরে যায়। প্লেটের হঠাৎই এই নড়াচড়ার ফলস্বরুপ ভুমিকম্পের উৎপত্তি হয়।

বেশীরভাগ ট্রান্সফর্ম সীমানা তৈরী হয় সাগরপৃষ্টে । খুবই কমসংখ্যক দেখা যায় ভুপৃষ্টে যেমন,কার্লিফোনিয়ার সান আন্দ্রিজ ফল্ট জোন। এই ফল্ট প্রায় ১,৩০০ কি.মি লম্বা। প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেট এবং নর্থ আমেরিকান প্লেটের সংর্ঘষের ফলে সান আন্দ্রিজ ফল্টের উৎপত্তি এবং গত ১০ মিলিয়ন বছর এই প্লেট দুটি বছরে গড়ে ৫ সে.মি করে পরষ্পরকে অতিক্রম করছে।



ফল্ট বা চ্যুতি: অধিকাংশ ভুমিকম্প ফল্ট জোনে উৎপন্ন হয়। ফল্ট হলো ভু-ত্বক বা লিথো¯েফায়ারেরশিলাতে ফাটল বিশেষ। ফল্টে শিলার একটি অংশ(ব্লক) আরেকটি অংশ থেকে উপরে,নীচে বা সমান্তরাল বরাবর সরে যায় এবং যে তল বরাবর শিলার দুটি ব্লক বিভিন্ন দিকে( উপরে, নীচে বা সমান্তরাল) সরে যায়, তাকে ফল্ট প্লেইন বলে।

স্টাইক-সিøপ ফল্ট: এ ধরনের ফল্টে দুটি ব্লক পরষ্পর থেকে সমারন্তরালে সরে যায় এবং ফল্ট প্লেন প্রায় উলম্ব বা খাড়া থাকে।


নরমাল বা সাধারণ ফল্ট: এ ধরনের ফল্টে একটি ব্লক আরেকটি ব্লক থেকে প্রায় উলম্ব তল (ফল্ট প্লেন) বরাবর নীচের দিকে সরে যায় এবং অন্য বল্কটি উপরে উঠে আসে। নীচের দিকে সরে যাওয়া ব্লকটিকে হ্যাংগিং ওয়াল বা ঝুলন্ত ওয়াল বলে এবং উপরের দিকে উঠে যাওয়া বল্কটিকে ফুটওয়াল বলে। মাঝের চিত্রে, গাছ সংবলিত ব্লকটি নীচের দিকে সরে এসেছে এবং অপর বল্কটি উপরের দিকে উঠে এসেছে। বিপরীতমুখী বা টেনশনাল শক্তির কারনে এই ধরনের ফল্টের উৎপত্তি হয়। নরমাল ফল্টকে নরমাল সিøপ ফল্ট,টেনশনাল ফল্ট এবং গ্যাভিটি ফল্টও বলে। উদাহরণ:বেসির ও রেন্জ ফল্ট।


বিপরীত বা রির্ভাস ফল্ট: এই ফল্টটি নরমাল ফল্টের বিপরীত। এক্ষেত্রে হ্যাংগিং ওয়ালটি উপরের দিকে সরে যায় এবং ফুটওয়ালটি নীচের দিকে সরে আসে। সংকোচনশীল বলের প্রভাবে এই ধরনের ফল্টের উৎপক্কি হয়। এ ধরনের ফল্টকে রির্ভাস সিøপ ফল্ট বা সংকোচনশীল ফল্ট বলে। উদাহরণ: রকি ও হিমালয় পর্বতমালা।