শনিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১৮

বাংলাদেশ ও নিকটবর্তী অঞ্চলের ভূমিকম্পের ইতিহাস

বাংলাদেশ ও এর আশেপাশের অঞ্চলের বিগত ২৫০ বছরের ভূমিকম্পের ইতিহাস পাওয়া যায়। ভূমিকম্পের রেকর্ড বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ১৯০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত শতাধিক মাঝারী থেকে বড় ধরনের ভূমিকম্প অনুভুত হয়েছে, যার মধ্যে ৬৫ টির ও বেশী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে ১৯৬০ সালের পর থেকে। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, বিগত ৩০ বছরে ভুমিকম্পের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভূমিকম্পের সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ার কারন নতুন টেকটনিক ক্রিয়ার সচলতা। ১৫৪৮ সাল থেকে বাংলাদেশ(বিশেষ করে ঢাকা) ও এর নিকটবর্তী অঞ্চলের ভূমিকম্পের ইতিহাস নীচে বর্ণনা করা হলো

:

১৫৪৮ ভূমিকম্প-আসাম: প্রথম লিপিবদ্ধ ভুমিকম্পের ঘটনা এটি। সিলেট এবং চট্টগ্রাম এই ভুমিকম্পে প্রচন্ডভাবে কেঁপে উঠে। বহু স্থানে ফাটল তৈরী হয় এবং আসাম,সিলেট,ত্রিপুরা এবং মেঘনা জলজভুমিতে ( ফ্লাডপ্লেইন ) গন্ধকযুক্ত পানি ও কাঁদা শূণ্যে নিক্ষিপ্ত হয়। রির্পোটের বর্ণনা থেকে ধারনা করা হয়, ১৫৪৮ সালের ভুমিকম্পের উপকেন্দ্র(এপিসেন্টার) ছিল আসাম বা নাগাল্যান্ডে। ঢাকাতে এই ভুমিকম্পের প্রভাব বিষয়ে কিছু জানা যায়নি তবে ধারনা করা যায় ঢাকায় এই ভু-কম্পনের  মাত্রা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে ৫(V) থেকে ৬(VII)


১৬৪২ ভূমিকম্প-আসাম: ১৫৪৮ সালের ভূমিকম্পের চেয়ে এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল বেশী (জরুার,১৯৭০)। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি সম্ভবত আসাম-সিলেট অঞ্চলে এবং এই ভূমিকম্পের প্রভাবে ঢাকায় মাঝারী মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সিলেটে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়। যদিও প্রাণহানীর কোন খবর পাওয়া যায়নি।

১৬৬৩ ভূমিকম্প-আসাম: ১৬৬৩ সালের ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল আসামে এবং থেমে থেমে স্থায়িত্ব ছিল আধা ঘন্টা। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিক্টারস্কেলে ৮ এর কাছাকাছি। ঢাকায় এর তীব্রতা ছিল সংশোধিত মার্কাল্লি স্কেলে ৬ (VI) থেকে ৭ (VII)মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয় তবে কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

১৭৬২ ভূমিকম্প-চট্টগ্রাম: ১৭৬২ সালের ভূমিকম্পটি ছিল অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক । সমগ্র বাংলা এবং আরাকান প্রদেশে এই ভূমিকম্প অনূভূত হয়। এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল চট্টগ্রাম-মায়ানমার উপকুলীয় বরাবর কোন স্থানে। ১৭৬২ সালের ২রা এাপ্রিল আনুমানিক বিকেল ৫ টায় এই প্রয়ংকারী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং মিয়ানমার বিস্তৃত এলাকা। বাংলাপিডিয়াতে এই ভূমিকম্পকে বর্ণনা করা হয়েছে নি¯œরুপ:
“২ এপ্রিল সংঘটিত এই ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে ফাউল দ্বীপ উপকুল ২.৭৪ মিটার ও চেদুয়া দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম উপকুল ৬.৭১ মিটার সমুদ্রপৃষ্টের উপরে উঠে যায়। এর ফলে চট্টগ্রামের কাছে ১৫৫.৪০ বর্গ কিমি এলাকা স্থায়ীভাবে দেবে যায়। এই ভূমিকম্প ঢাকা ও চট্টগ্রাম পর্যন্ত মেঘনার পূর্বতীর বরাবর প্রচন্ডভাবে অনূভূত হয়। ঢাকায় মোট ৫০০ লোকের প্রাণহানি ঘটে। এখানকার নদী ও খাল-বিলের পানি উপচে স্বাভাবিক মাত্রার উপরে উঠে আসে এবং পরে এই পানি যখন নেমে যায় তখন মরা মাছের আস্তরণে নদীর তীর ভরে যায়। একটি বড় নদীর পানি সম্পূর্ণভাবে উপচে নদীটি শুকিয়ে যায়।এক খন্ড ভূমি ডুবে গিয়ে দুশ লোক ে অনেক গবাদিপশু মারা যায়”।
১৭৬২ সালের ভূমিকম্পের তান্ডব ও বিস্তৃতি বিবেচনায় ধরলে এই ভূমিকম্পকে ২০০৪ সালের সুমাত্রা ভূমিকম্পের সাথে তুলনা করা চলে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিক্টারস্কেলে ৮.৫-এর উপওে এবং তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে ৬(VI)

১৭৭৫ ভূমিকম্প : এই ভূমিকম্প সর্ম্পকে খুব অল্পই জানা যায় । ১০ এপ্রিল ঢাকার আশে পাশে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়। কোন প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে নাই।

১৮১২ ভূমিকম্প-ঢাকা:১৮১২ সালে ঢাকায় দুটি ভুমিকম্প অনুভুত হয়-১০ এপ্রিল এবং ১১ মে। এই দুটি ভূমিকম্পের এপিসেন্টার অজানা। তবে ধারনা করা হয় এপিসেন্টার ছিল ঢাকার খুব নিকটেই। ভূমিকম্পের তীব্রতায় উল্লেখ্যসংখ্যক বাড়ী ঘর বিনষ্ট হয় এবং তেঁজগাঁও-এ বেশকিছু দালানকোঠা ক্ষতিগ্রস্ত হয় । ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে  ৮ (VIII)

১৮২২ ভুমিকম্প-কিশোরগঞ্জ:১৮২২ সালের ৩ রা এপ্রিল। সকাল সাড়ে দশটা । রিক্টারস্কেলে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে ঢাকা সহ সারা বাংলাদেশ। ময়মনসিংহে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত খবর পাত্তয়া যায়। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকা থেকে ৭০ কি.মি উত্তরপূর্বে অবস্থিত কিশোরগঞ্জে।তীব্র ভূমিকম্পের পর তিনটি ক্ষুদ্র কম্পনেরও (আফ্টার শ্ক) উৎপত্তি ঘটে। ঢাকায় ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে  ৬(VI)

১৮৪২ ভূমিকম্প-রাজশাহী: ১৮৪২ সালের ১১ নভেম্বর। রিক্টারস্কেলে ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে ঢাকা সহ সারা বাংলাদেশ। পাবনা জেলা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র (এপিসেন্টার) ছিল ঢাকার ১৯০ কি.মি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিমে অবস্থিত রাজশাহীতে। ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে  ৫(V)

১৮৪৫ সিরাজগঞ্জ ভূমিকম্প : ১৮৪৫ সালে ঢাকায় তিনটি তীব্র ভূমিকম্প অনূভূত হয়। ২৩ জুলাই,২৬ জুলাই ও ৬ আগষ্ট তারিখে তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে বাংলা ও আসামের কিছু অংশ। প্রথম ভূমিকম্পটি হয় ২৩ শে জুলাই আনুমানিক বিকেল সাড়ে চারটায়। রিক্টার স্কেলে মাত্রা ছিল ৫.৯। দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি অনূভূত হয় ২৬ শে জুলাই রাত দু’টায়। রিক্টার স্কেলে মাত্রা ছিল ৬.১। তৃতীয় ভূমিকম্পটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী (রিক্টার স্কেলে মাত্রা ছিল ৭.১)। ৬ আগষ্ট রাত সাড়ে এগারোটায় এই ভূমিকম্প অনূভূত হয়। প্রথম দুইটি ভূমিকম্পের এপিসেন্টার ছিল ঢাকার ১০০ কি.মি উত্তরপশ্চিমে অবস্থিত সিরাজগঞ্জে। তৃতীয় ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ২৬৫ উত্তওে অবস্থিত পশ্চিম আসামে। ঢাকায় ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে ৫(V)থেকে ৬(VI)।

১৮৪৬ ময়মনসিংহ ভূমিকম্প:১৮৪৬ সালের ১৮ অক্টোবর। বেলা দুটায় ঢাকায় একটি তীবমার্ত্রার ভূমিকম্প অনূভুত হয়। এই ভূমিকম্পটির আগে তিনটি ছোট মাত্রার ভূমিকম্প       (foreshake) অনুভুত হয় যথাক্রমে ১৬ অক্টোবর (সকাল ১১:১০ ) এবং ১৭ অক্টোবর (সকাল ৬:১০ এবং দুপুর ১১:২০)। মুক্তাগাছা এবং শেরপুওে দালানকোঠা ধব্বংস হয়, অপরদিকে ময়মনসিংহে অনেক ¯হাপনা যেমন মসজিদ,গির্জা এবং বহুসংখ্যক সরকারী দপ্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  ময়মনসিংহ কারাগারে ইট ও প্লাস্টার খসে বেশকিছু কয়েদি আহত হয়। ভুমিকম্পটির উপকেন্দ্রটি ছিল ঢাকার ১৫০ কি.মি উত্তরে ময়মনসিংহের ফুলপুরের কাছে। রিক্টার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.২। ঢাকায় ক্ষয়ক্ষতির তেমন কোন তথ্য জানা যায়নি। ঢাকায় এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে ৬(VI)।
১৮৬৫ চট্টগ্রাম ভূমিকম্প:১৮৬৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর। সন্ধ্যা ৬:৪৫ টায় ঢাকা শহর শক্তিশালী ভুমিকম্পে কেঁপে উঠে। ভুমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির বিবরন প্রকাশিত হয় তৎকালীন পত্র-পত্রিকায়    (বেঙল হুরকারু,১৮৬৫,ডিসেম্বর ১৬-ডিসেম্বর ২২;ইংলিশম্যান,১৮৬৫,ডিসেম্বর ১৬-জানুয়ারী ৪)। ধারনা করা হয় এই ভুমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল চট্টগ্রাম। ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেশ কয়েক দফা ছোট মাত্রার ভূমিকম্প (aftershock) অনূভূত হয়।

১৯ ডিসেম্বর রাত সাড়ে নয়’টার দিকে আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনূভূত হয় উত্তরবংগে। ঢাকা শহরেও এই ভূমিকম্প জোরেশোরে অনুূভুত হয়।এই দুটি ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে যথাক্রমে ৬(VI)এবং ৭ (VIII)। 

১৮৬৯ কাচার ভূমিকম্প:এই ভূমিকম্প কাচার (আসামের একটি জেলা) নামেও পরিচিত। ১৮৬৯ সালের ১০ জানুয়ারী বিকেল ৫ টা ১৫ মিনিটে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় এবং উপকেন্দ্র ছিল কুমভির (আসাম)-এর ৯.৪ কি.মি উত্তরে। ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চল-শিলচর,শিলং এবং মনিপুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। সিলেটে এই ভূমিকম্প বেশ ভালো ভাবে অনুভূত হয়।জেলার পূর্বাঞ্চলে গির্জার চূড়া ভেঙে পড়ে, আদালত ভবন ও সার্কিট বাংলোর দেয়ালে চিড় ধরে, বহু নদীর তীর দেবে যায়, তবে প্রাণহানীর কোন খবর পাওয়া যায়নি(সূত্র:বাংলাপিডিয়া)। ঢাকাতেও এই ভূমিকম্প অনূভূত হয়। রিক্টার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৫ এবং ধারনা করা হয় আসাম-সিলেট ফল্টের পুন:সক্রিয়তার জন্য এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি। সমগ্র বাংলাদেশেই এই ভূমিকম্প অনূভূত হয়। গোয়ালপাড়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি প্রচন্ড আলোড়িত হয় এবং তীর থেকে উপচে পড়ে। ঢাকায় এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে ৪ থেকে ৫।

১৮৭৬ ভূমিকম্প : ১৪ জুলাই এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছিল মানিকগঞ্জে। রিক্টারস্কেলে মাত্রা ছিল ৭.০। ১৩ ডিসেম্বর আরেকটি ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়।কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাত্তয়া যায়নি। ঢাকাতেও এই ভূকম্পন অনূভূত হয়।

১৮৮৫ বেঙল ভূমিকম্প : ইতিহাসে এই ভূমিকম্প বেঙল ভূমিকম্প নামে পরিচিত। ১৮৮৫ সালের ১৪ জুলাই এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি। ১৪ জুলাই ভূমিকম্পের পর আরো এগারটি ছোট ছোট ভূমিকম্প(after shock) হয়। ২১ জুলাই থেকে  ০৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কয়েক দফা ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে পুরো বাংলা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই ভূমিকম্প ছিল বাস্তবিক অর্থেই শক্তিশালী। ১৪ জুলাই সকাল ৬:২৫ মিনিটে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়।উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ৫০ কি.মি উত্তরপশ্চিমে  মানিকগঞ্জে।ধারনা করা হয় এর মধুপুর ফল্টে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি। রিক্টারস্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭।

১১৮৫ সালে ইন্ডিয়ার ভূতত্ত্ব জরিপ বিভাগে কর্মরত ভুতত্ত্ববিদ সি.এস মিডলম্যান এই ভুমিকম্পের উপর একটি রিপোর্ট প্রদান করেন। এই রির্পোটে তিনি উল্লেখ্য করেন “বাংলায় এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি ফলে সমগ্র অঞ্চলেই এর তান্ডবলীলা পরিলক্ষিত হয়। এই ভূমিকম্পের তান্ডবলীলা বিস্তৃত ছিল পশ্চিমে ছোট নাগপুর এবং বিহার পর্যন্ত। উত্তরে সিকিম এবং ভুটান এবং পূর্বে আসাম,মনিপুর এবং বার্মা পর্যন্ত।২,৩০,৪০০ বর্গমাইল এলাকা এই ভুমিকম্পে প্রকম্পিত হয়”। সি.এস মিডলম্যান ঢাকাসহ বেশকিছু ভূমিকম্প কবলিত এলাকা পরিদর্শণ করেন এবং ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ পেশ করেন।যেমন,শেরপুরেএবং ময়মনসিংহে বেশকিছু পুরানো জীর্ণ হিন্দু শিব মন্দির ভেঙে পড়ে। সিরাজগঞ্জের একটি জুটমিলের চারদেয়ালে ফাটল দেখা দেয় এবং বেশকিছু ইংরেজ কর্মকর্তাবাসভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।ময়মনসিংহে কারাগারের দেয়ালে বিশাল ফাটল দেখা দেয় এবং একটি মসজিদের দেয়ালও বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঢাকায় এই ভূমিকম্পের তেমন ক্ষয়ক্ষতি দেখা যায়নি।
১৮৮৫ সালের ভূমিকম্পে সিরাজগঞ্জ,সুবর্ণখালী এবং জামালপুরেএবং বেশ কিছু ˉহানে মাটিতে ফাটল দেখা দেয়।লম্বা ও সরু ফাটল দেখা দেয় মূলত নদীর তীরবর্তী এবং উঁচু সড়কে।


Martin I Szeliga (২০১০) কর্তৃক লিখিত A catalog of felt intensity data for 589 earthquakes in India,1636-2008 গ্রন্হে এই ভূমিকম্পের একটি বিশদ বর্ণনা পাওয়া যায় “ অন্তত ৭৫ জনের মৃত্যুর রিপোর্ট করা হয়েছে যার মধ্যে ৪০ জন শেরপুরে,১১ জন আজিমগঞ্জে,১১ জন রাজবাড়ীতে,৫ জন বগুড়ায়, ৪ জন গোবিন্দপুওে এবং ৪ জন দমদমে (টাইম্স,১৮৮৫,জুলাই ১৫-জুলাই ২০)। ঢাকাতেও কিছুসংখ্যক নিহতের খবর আছে। ময়মনসিংহ,নাটোর,সিরাজগঞ্জ এবং বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ছিল ব্যাপক। কলকাতাতেও বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়-দেয়াল থেকে আস্তরন খসে পড়ে এবং লোকজন রাস্তায় বের হয়ে পড়ে (ইংলিশম্যান ১৮৮৫, জুলাই ১৫-জুলাই ২০)। চট্টগ্রাম, চুনার,দার্জিলিং, গিরিডি এবং ই¤পফলেও এই ভমিকম্প অনুভূত হওয়ার খবর পাওয়া যায়( ইংলিশম্যান ১৮৮৫,মিডলমিস ১৮৮৫)। কলকাতার হুগলী নদীর পানিতে আলোড়ন পরিলক্ষীত হয় (Times 1885)”।

উপরের বর্ণনা থেকে বোঝা যায় যে, ঢাকায় এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে ৭ (VII)থেকে ৮(VIII)।

১৮৯৭-গ্রেট ইন্ডিয়ান ভূমিকম্প ঃইতিহাসে এই ভূমিকম্প দি গ্রেট ইন্ডিয়ান ভূমিকম্প নামেও পরিচিত। এই প্রয়ংকারী ভূমিকম্পটি অনূভূত হয় ১৮৯৭ সালের ১২ জুন বিকেল ৫ টা ১১ মিনিটে (বাংলাদেশর স্থানীয় সময়)। ঢাকার প্রায় ২০০ কি.মি উত্তরে শিলং মালভূমির পশ্চিম অংশে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। সম্ভবত ডাউকি ফল্টের পুনরায় সক্রিয়তার জন্য এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি। যদিও ভূতত্ত্ববিদ বিলহ্যাম এবং ইংল্যান্ড (২০০১)-এর মতে শিলং মালভূমির উত্তর অংশে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি। রিক্টার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮.৭। ভু-কম্পণের সাথে সাথে ভূ-অভ্যন্তরে গর্জনের মতো শব্দ শোনা যেতে থাকে, যা  প্রায় ৩ মিনিটের মতো ˉহায়ী ছিল(জনসন,১৯৮৮)। এই শব্দকে তুলনা করা যেতে পারে ঝঞ্চাবিক্ষুদ্ধ মাঝ সমুদ্রে সহ¯্রাধিক জাহাজের ইঞ্জিনের মিলিত ঐক্যতানের সাথে। শিলং-এ এই ভূমিকম্পের ˉহায়িত্ব ছিল প্রায় আড়াই মিনিট। এই ভূমিকম্পের তীব্রতা এমন ছিল যে মুহুতেই দালানকোঠা মাটিতে মিশে যায় (মুর,১৯১০। ভূমিকম্পের ফলে ৩,৯০,০০০ বর্গ.কি.মি এলাকা ধব্বংসস্তুুপে পরিণত হয়। মায়ানমার থেকে দিল্লী পর্যন্ত ৬,৫০,০০০ বর্গ কি.মি এলাকায় এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিতে বিপুল সংখ্যক ফাটলের সৃষ্টি হয়। উপকেন্দ্র এলাকা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভুমিকম্পের সেকেন্ডারী প্রভাব পরিলক্ষিত হয়  যেমন, ভূ-গর্ভ থেকে পানি এবং বালির শূণ্যে প্রক্ষেপন,পিলারের ঘূর্ণায়মানতা, নদীর উচ্চতা বৃদ্ধি, মাটির তরলতা বৃদ্ধি এবং বাড়িঘর দেবে যাওয়া। ঢাকাতে প্রায় দুইমাসের অধিক সময় ধরে এই ভূমিকম্পের আফটারশক্ (ভারী ও হালকা) দেখতে পাওয়া যায়।আসামের বোরওয়ার টি এস্টেটে ভূমিকম্পের এক সপ্তাহের পরেও টেবিলে রাখা একটি গ্লাসের পানির তল অবিরত কাঁপতে দেখা গেছে। তুরাতে একটি ঝুলন্ত বাতি টানা তিন দিন ধরে দুলতে দেখা যায়। ১৬২৬ জনের প্রাণহানী ঘটে

 ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে ঢাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান উল্লেখ্যযোগ্য হলেও, সে তুলনায় প্রাণহানী ছিল কম। বেশকিছু স্থানে ভূমিতে ফাটল পরিলক্ষিত হয়। ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে ৮-এর উপরে (VIII+)। শাহীন মেডিকেল হল,নাজিরের মঠ,শাহবাগ, মিসেস স্টান্সবারির বাসভবন-সম্পূর্ণভাবে ধব্বংসস্Íুপে পরিণত হয় এবং পাঁচজন নিহত হয়, যার মধ্যে দুইজন বিদেশীও ছিল। অন্যদিকে নয়টি বাসভবন বসবাসের সম্পূর্ণ অননুপোযোগী হয়ে পড়ে -যার মধ্যে ছিল কমিশনারের বাসভবন,কারেক্টরের বাসভবন,জর্জ এবং সিভিল সার্জনের বাসভাবন।ক্ষয়ক্ষতির পরিমান সর্ম্পকে সরকার যে বিবৃতি দেয়সে তুলনায় ˉহানীয় পত্রপত্রিকার বিবরণ ছিল ভিন্ন। একটি স্থানীয় বাংলা পত্রিকায়(ঢাকা প্রকাশ ১৮৯৭, জুন ২১) বলা হয়,“প্রায় পাঁচশত বাড়িঘর সম্পূর্ণরুপে ধসে পড়েছে এবং আটহাজার ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। মানুষজন আতংকিত এবং মানসিকভাবে বিপযস্ত হয়ে পড়ে।বেশীরভাগ বিদেশীরা আতংকে ঘরবাড়ি ছেড়ে খোলা আকাশের নীচে তাবুতে এবং নৌকায় বসবাস করতে থাকে থাকে। ঢাকার অধিকাংশ অধিবাসী ভূমিকম্পের আতংকে অভুক্ত হয়ে  বিনিদ্র রজনী পার করে"।


Martin I Szeliga  (২০১০)উল্লেখ্য করেন যে,“শিলং-এ একজন প্রত্যক্ষদর্শী বর্ণনা করেন যে,“আমি দাড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না। হাত ও কনুইয়ের উপর ভর কওে হামাগুড়ি দিয়ে সামনে অগ্রসর হই এবং একটি গাছকে আঁকড়ে ধরি”। রামব্রাইতে ছয় ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট একটি খাসিয়ান প্রস্তরখন্ড এর পাটাতন থেকে ৬.৫ ফুট দুরত্বে ছিটকে পড়ে। মুত্তাগাছায় সকল স্থাপনা মাটির সাথে মিশে যায় । তাছাড়া দুর্গাপুর,গৌরিপুর, কালিপুর এবং রামগোপালপুরেও সকল স্থাপনা মাটির সাথে মিশে যায়। মুক্তাগাছায় ভূমিকম্পের প্রকোপ এতটা বেশী ছিল যে, মাটিতে কেউ দাড়িয়ে থাকতে পারেনি,মাটিতেশুয়ে থাকতে হয়েছে।বহরামপুর,ভাগলপুর,কুমিল্লা,ঢাকা,ঢুবরী,গ্যাংটক,গুয়াহাটি,গোলপাড়া,ই¤ফল,মুর্শিদাবাদ,করিমগঞ্জ,কলকাতা এবং সিলেট প্রভৃতি অঞ্চলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কবলে পড়ে।


Khan (১৯৭৮) উল্লেখ্য কওেই, “ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইনের পাকা রাস্তা ও সেতুসমুহ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সপ্তাহ দুয়েক ট্রেন ও যান চলাছল বন্ধ হয়ে যায়। এই জেলায় নৌ চলাচলেও বির্পযয় ঘটে”।

১৯১৮-শ্রীমংগল ভূমিকম্প : তীব্রমাত্রার এই ভূমিকম্প শ্রীমঙল ভূমিকম্প নামেও পরিচিত। ভুমিকম্পের উৎপত্তিˉহল ছিল ময়মনসিংহের দক্ষিণপূর্বে এবং ঢাকার ১০০ কি.মি উত্তরপূর্বে কিশোরগঞ্জের কাছে। স্থানীয় সময় বিকেল ৪ টা ২২ মিনিটে এই ভূমিকম্প অনূভুত হয় এবং রিক্টারস্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.৬। ফোকাসের গভীরতা ছিল মাত্র ১৪ কি.মি। সমগ্র বাংলাদেশেই এই ভূমিকম্প তীব্রভাবে অনুভুত হয় এবং ভূ-কম্পন মাত্রা ছিল মডিফায়েড মাকাল্লি স্কেলে ৭। এই ভূমিকম্পে ঢাকার দালানকোঠা যথেষ্ট পরিমানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


Martin I Szeliga (২০১০) উল্লেখ্য করেন যে,“ বাংলাদেশ এবং আসামে অন্তত ৯ জন নিহত হয় এবং বহু লোক আহত হয় এই ভূমিকম্পে ( দি স্টেটম্যান,১৯১৮, জুলাই ৯-জুলাই ২৪)”। অনেক শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কবলে পড়ে, তাছাড়া বাংলাদেশ-ত্রিপরা সিমান্তে অবস্থিত চা বাগান সমূহ ব্যাপকহারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিশেষ করে শ্রীমংগলের কাছে বালিছেড়া উপত্যকায় অবস্থিত চা বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যাপকভাবে”।

১৯২৩-মেঘালয় ভূমিকম্প :৯ সেপ্টেম্বর ১৯২৩, রাত সাড়ে দশটা । রিক্টারস্কেলে ৭.১ মাত্রার ভ’মিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ১৮০ কি.মি উত্তর-উত্তরপূর্বে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছে দক্ষিণ মেঘালয়ে। এই তীব্রমাত্রার ভুমিকম্পে ময়ময়নসিংহে সবচেয়ে বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং কম্পন সমগ্র বাংলাদেশেই অনূভূত হয়। ঢাকায় এর কম্পন মাত্রা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে ৬(ঠও)।


Martin I Szeliga  (২০১০) উল্লেখ্য করেন যে,“ এই ভূমিকম্পে ময়মনসিংহে অন্ততপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়। ময়মনসিংহে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয় । আগরতলা,গুয়াহাটি এবং কলকাতায় সামান্য ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায় (Englishman,1923,September 10-September 15)”।

১৯৩০-ডুবরী ভূমিকম্প :এই ভূমিকম্প ডুবরী ভূমিকম্প নামেও পরিচিত। ১৯৩০ সালের ২ জুলাই ভোর ৩ টা ৫৩ মিনিটে ( বাংলাদেশ ˉহানীয় সময়) রিক্টারস্কেলে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্পটি অনূভূত হয়। এই ভূমিকম্পটির পর ছয়টি ৬ মাত্রার ভূমিকম্প ( VI) অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ২৩০ কি.মি উত্তরে দাবিগিরির নিকটে মেঘালয়ের উত্তরপশ্চিমের শিলং উপত্যকায়। সমগ্র বাংলাদেশেই ভূমিকম্পটি অনূভূত হয় এবং ঢাকায় ভূ-কম্পন মাত্রা ছিল মডিফায়েড মাক্কাল্লি স্কেলে ৬ এর উপরে।

Martin I Szeliga (২০১০) উল্লেখ্য করেন যে, “বাংলাদেশের বিশালপুরে একজন নিহত হয়। ক্ষয়ক্ষতির তেমন ব্যাপক না হলেও উপকেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকা যেমন কুচবিহার,ঢুবরী,লালমনিরহাট,নিলফামারী এবং তুরায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ছিল ব্যাপক।


১৯৩৪-বিহার-নেপাল ভূমিকম্প:এই ভূমিকম্প বিহার-নেপাল ভূমিকম্প নামেও পরিচিত। ১৯৩৪ সালের ১৫ জানুয়ারী দুপুর ২ টা ৪৩ মিনিটে ( বাংলাদেশ ˉহানীয় সময়) রিক্টারস্কেলে ৮.৪ মাত্রার ভূমিকম্পটি অনূভূত হয়। তীব্র এই ভূমিকম্পে নেপাল ও বিহারের বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। অন্তত ৮,৫১৯ জন নিহত হয় নেপালে (Pandey and Molnar,1988)।
এবং ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে ৭২৫৩ জনের প্রাণহানীর খবর পাওয়া যায় (Dunn et al.,1939)|।ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ৫০০ কি.মি উত্তরপশ্চিমে বিহার-নেপাল সীমান্তের কাছে নেপালের পূর্বাঞ্চলে। সমগ্র বাংলাদেশেই ভূমিকম্পটি অনূভূত হয় এবং ঢাকায় ভূ-কম্পন মাত্রা ছিল মডিফায়েড মাক্কাল্লি স্কেলে ৬ ।

১৯৩৫-পাবনা ভূমিকম্প:১৯৩৫ সালের ২১ মার্চ রিক্টারস্কেলে ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্পটি অনূভূত হয়। ঢাকায় মাঝারী মাত্রার ভূমিকম্প অনূভূত হয়। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ১৩০ কি.মি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিমে পাবনায়। সমগ্র বাংলাদেশেই ভূমিকম্পটি অনূভূত হয় এবং ঢাকায় ভূ-কম্পন মাত্রা ছিল মডিফায়েড মাক্কাল্লি স্কেলে ৬ ।

১৯৪৩-আসাম ভূমিকম্প: ১৯৪৩ সালের ১০ অক্টোবর রাত ১১ টা ২৩ মিনিটে (বাংলাদেশ ˉহানীয় সময়) রিক্টারস্কেলে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চল কেঁপে উঠে। ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ৩৬৫ কি.মি উত্তরপূর্বে আসামের হাজাই প্রদেশে। ভূমিকম্পটি সর্ম্পকে তেমন বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় না কারণ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-এর কারনে বৃটিশভারতের পূর্ব সীমান্ত আক্রান্ত হয়েছিল জাপানী সৈন্য দ্বারা। নেপাল, দক্ষিণ তিব্বত এবং মায়ানমারের কিছু অংশে মাঝারী মাত্রার ভূমিকম্প অনূভুত হয়(Ambraseys and Douglas,2004))। ঢাকায় ভূ-কম্পন মাত্রা ছিল মডিফায়েড মাক্কাল্লি স্কেলে ৫ থেকে ৬ মধ্যে।

১৯৫০ ভূমিকম্প-আসাম-তিব্বত:  এই তীব্রমাত্রার ভূমিকম্প আসাম ভূমিকম্প নামেও পরিচিত এবং বিংশ শতাব্দীতে সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্পের মধ্যে এটি ষ®ঠতম। রিক্টার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮.৬। ইন্দো-চীন সীমান্তের কাছে অরুণাচল প্রদেশের জনবহুল অঞ্চলে এই ভূমিকম্পের প্রকোপ বেশী ছিল। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ৮০০ কি.মি উত্তরপূর্বে তিব্বতের রিমায়। ১৫ আগষ্ট রাত ৮ টা ০৯ মিনিটে (বাংলাদেশ ¯হানীয় সময়) এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় এবং সারা বাংলাদেশে কম্পন অনুভুত হয়। ঢাকায় ভূ-কম্পনের মাত্রা ছিল মডিফায়েড মার্কাল্লি স্কেলে ৪। আসাম ও তিব্বতে নিহতের সংখ্যা ১৫০০ থেকে ৩,৩০০(উইকিপিডিয়া)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের ছাত্ররা, বিশেষ করে ফজলুল হক মুসলিম হলের ছাত্ররা আতংকগ্রস্ত হয়ে নিরাপত্তার জন্য খোলা জায়গায় আশ্রয় নেয়(Prof.Kazi Abdul Fattah,personal communication))। ঢাকারবহু দুরে উৎপন্ন এই ভূমিকম্পের ভূ-কম্পন তরংগের ফলে ঢাকার পানিতে(পুকুর,নদী, জলাশয়) প্রায় ঘন্টাখানেক কম্পন দেখা যায়।

১৯৫৪ ভূমিকম্প-মনিপুর-মায়ানমার সীমান্ত : ২২ মার্চ ১৯৫৪। ঢাকায় বেলা ১২ টা ১৭ মিনিটে        ( বাংলাদেশ ˉহানীয় সময়)একটি তীব্রমাত্রার ভূমিকম্প অনূভূত হয়। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ৪৮০ কি.মি পূর্ব-উত্তরপূর্বে মনিপুর-মায়ানমার সীমান্তের কাছে উত্তর মায়ানমারে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিক্টারস্কেলে ৭.৭। সারা বাংলাদেশেই কম্পন অনূভূত হয় এবং ঢাকায় ভূ-কম্পন তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্ক্কালি স্কেলে ৫। অনেক নগরবাসী আতংকে ঘরের বাইরে চলে আসে। ঢাকায় ক্ষয়ক্ষতির তেমন খবর না পাওয়া গেলেও ঢাকার পানিতে(পুকুর,নদী, জলাশয়) কম্পন দেখা যায়
(Prof.Kazi Abdul Fattah,personal communication)।

১৯৭৭ ভূমিকম্প-বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত :১২ মে১৯৭৭। সন্ধ্যা ০৬ টা ২০ মিনিটে                  ( বাংলাদেশ ˉহানীয় সময়) একটি মাঝারী মাত্রার ভূমিকম্প অনূভূত হয়। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ৩৪০ কি.মি দক্ষিণপূর্বে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের কাছে এবং ফোকাস বা কেন্দ্র ছিল ৪০ কি.মি। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিক্টারস্কেলে ৫.৭। সারা বাংলাদেশেই কম্পন অনূভূত হয় এবং ঢাকায় ভূ-কম্পন তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্ক্কালি স্কেলে ৩। বান্দরবানে বেশ জোরালো কম্পন অনূভূত হয় । ¯হানীয় একটি রাজনৈতিক সভায় যোগদানকারীরা আতংকে খোলা জায়গায় আশ্রয় নেয়। চট্টগ্রামে অনেক ইমারতে ফাটল দেখা দেয় এবং উল্লেখ্যসংখ্যক লোক আহত হয় । বেশ কয়েকজন উঁচু দালান থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হয় (Bangladesh Observer,May 13,1977)।

১৯৮৮ ভূমিকম্প-মায়ানমার : ৬ আগষ্ট১৯৮৮। ভোর ০৬ টা ৩৬ মিনিটে ( বাংলাদেশ ˉহানীয় সময়) একটি তীব্রমাত্রার ভূমিকম্প অনূভূত হয়। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিক্টারস্কেলে ৭.৩। আসামের সিলচর প্রদেশে ঘরচাপা পড়ে দুই ব্যাক্তি নিহত এবং বার জন আহত হয়। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ৫০৫ কি.মি পূর্ব-উত্তরপূর্র্বে  উত্তর মায়ানমারের তোনমালাও প্রদেশে এবং ফোকাসের গভীরতা ছিল  ৯০ কি.মি।ভূমিকম্পটি সারা বাংলাদেশে অনূভূত হয় কিন্ত ক্ষয়ক্ষতির ছিল নগন্য
(Martin and Szeliga 2010)। ঢাকায় ভূ-কম্পন তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্ক্কালি স্কেলে ৫। ঘুমন্ত লোকজন আতংকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে খোলা জায়গায় আশ্রয় নেয়।

১৯৮৮ ভূমিকম্প-বিহার-নেপাল: ১৯৮৮ সালের ২১ আগষ্ট। ভোর ৫টা ০৯ মিনিটে (বাংলাদেশ ˉহানীয় সময়)উচু বিল্ডিং-এর  অধিবাসীদের ঘুম ভাঙেবড়মাত্রার ভূমিকম্পের ঝাঁকুনীতে। ভূমিকম্পের উৎপত্তি¯হল ছিল ঢাকার ৫১০ কি.মি উত্তরপশ্চিমে বিহার সীমান্তের কাছে উত্তর নেপালে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিক্টারস্কেলে ৭.৮ এবং ফোকাসের গভীরতা ছিল ৫৭ কি.মি। নিহতের সংখ্যা ছিল ৯৯৮। নেপাল ও বিহাওে  বেশ কিছু দালানকোঠা সম্পূণৃরুপে ধব্বংস হয়ে যায়। বাংলাদেশে বেশীরভাগ ˉহানে এই তীব্রমাত্রার ভূমিকম্প অনূভূত হয়। বেশিরভাগ নদনদী ও জলাশয়ে ভূ-তরংগীয় কম্পন দেখা যায় এবং ¯্রােতের তান্ডবে অনেক নৌকা তলিয়ে যায়। বিশেষ করে, যমুনা নদীতে একটি ফেরী ডুবে । ফেরী ডুবে যাওয়ায় ঘটনা¯হলেই দুই ব্যক্তি নিহত হয় ও নিখোঁজ হয় তিরিশের মতো ফেরী আরোহী(Bangladesh Observer,August 22,1988)। ঢাকায় ভূ-কম্পন তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্ক্কালি স্কেলে ৫।

১৯৯৭ ভূমিকম্প-বান্দরবান: এই ভূমিকম্পটি বান্দরবান ভূমিকম্প নামেও পরিচিত। চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে ২৩ জন নিহত হয় এবং চট্টগ্রামের হামগরবাগে একটি পাচঁতলা আরসিসি বিল্ডিং ধসে পড়ে। ২১ নভেম্বর হানীয় সময় বিকেল ৫ টা ২৩ মিনিটে এই ভূমিকম্পটি অনূভূত হয়। রিক্টার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬.১ এবং ফোকাসের গভীরতা ছিল ৫৪ কি.মি। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ২৯০ কি.মি দক্ষিণপূর্বে এব্ং বান্দরবানের ৫০ কি.মি পূর্বে বাংলাদেশ-মিজোরাম-মায়ানমার সীমান্তের কাছে।


২০০১ ভূমিকম্প-ঢাকা:ঢাকাবাসী এক সেকেন্ডের ব্যবধানে পরপর দুইটি ভূ-কম্পন অনূভব করে। প্রথম কম্পনটি পি-তরঙের কারনে এবং দ্বিতীয় কম্পনটি এস-ওয়েভের উপ®িহতির কারনে। এই ভূ-কম্পনটি অনুভূত হয় শহরের দক্ষিন অংশে। ২০০১ সালের ১৯ ডিসেম্বও বাংলাদেশ ®হানীয় সময় বেলা ১টা ৫৪ মিনিটে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কার্জন হলের ১১ কি.মি দক্ষিণে বুড়িগঙার অপর প্রান্তে কালাকান্দিতে। রিক্টারস্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.৫ এবং  ফোকাসের গভীরতা ছিল ১০ কি.মি। ভূমিকম্পটির ®হায়িত্ব ছিল ২১ সেকেন্ড।ঢাকা ছাড়াও এই ভূমিকম্প অনূভূত হয় নারায়ণগঞ্জ,মুন্সিগঞ্জ,চট্টগ্রাম,কুমিল্লা,গাজীপুর,লক্ষীপুর,রাজশাহী এবং রংপুরে। ঢাকায় ভূ-কম্পন তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মার্ক্কালি স্কেলে ৫ থেকে ৬ এর ভেতর। ভূমিকম্পের সময় ঢাকাবাসী আতংকে বাড়ীঘর ও অফিস-আদালত ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নেয়। আতংকে হুড়োহুড়ি কওে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে শ’খানেক কয়েদি আহত হয়। মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় অব®িহত সু-উচ্চ বিল্ডিং থেকে চাকরীজীবিরা সভয়ে রাস্তায় নেমে আসে এবং প্রায় ঘন্টাখানেক রাস্তায় অব®হান করে। পুরানো ঢাকায় অল্পসংখ্যক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

২০০৩ ভূমিকম্প-বরকল:এই ভূমিকম্প বরকল ভূমিকম্প নামেও পরিচিত। ২০০৩ সালের ২৭ জুলাই ভোর ৫ টা ১৮ মিনিটে এই ভূমিকম্প অনূভূত হয়। চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে ৩ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়। তাছাড়া ৫০০-এর মতো ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মধুনাঘাট সাব-ষ্টেশনে ট্রান্সফারমার বি¯েফারণের কারনে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘœ ঘটে। ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ২১৭ কি.মি দক্ষিণপূর্বে কাপ্তাই লেকের পূর্ব পাড়ে। রিক্টারস্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৭ এবং ঢাকায় এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল মডিফায়েড মাক্কালি স্কেলে ৪। ঢাকাবাসী ঘুম থেকে হঠাৎ জেগে উঠে, বিশেষ করে, সু-উচ্চ ভবনের অধিবাসীরা এই কম্পণের ফলে জেগে উঠে।

২০০৪ ভূমিকম্প-সুমাত্রা:সুমাত্রা ভূমিকম্প নামেও পরিচিত। ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর সকাল ৬টা ৫৮ মিনিটে সুমাত্রার পশ্চিম উপকুলে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। রিক্টারস্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৯.৩ এবং ফোকাসের গভীরতা ছিল ৩০ কি.মি। ইতিহাসে সংঘটিত প্রানঘাতী প্রাকৃতিক বির্পযয়গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এই প্রলয়ংকারী ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট সুনামী ভারত মহাসাগরের সীমান্তবর্তী প্রায় সকল দেশের উপকুলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে। ১৪ টি দেশে মৃতের সংখ্যা দাড়ায় ২,৩০,০০০ জন, যার মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে ২ জন।

ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ২৩৫০ কি.মি দক্ষিণে । সমগ্র বাংলাদেশেই ভূমিকম্প অনূভুত হয়। বড়মাত্রার ভূমিকম্প স্বভাবতই অতি ক্ষুদ্র ফ্রিকোয়েন্সি সম্পন্ন বড় ভূ-কম্পনণীয় তরঙ সৃষ্টি করে, যা সাধারণত অনুভূত নাও হতে পারে। এই ভূ-কম্পনীয় তরঙ ভূ-গর্ভস্থ ও ভূ-পৃ®েঠর পানির প্রবাহে প্রভাব ফেলে। নদী,লেক ও পুকুরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। ঢাকায় ধানমন্ডি,মোহাম্মদপুর,মিরপুর,তেজগাও,গুলশান,বনানী,উত্তরা,খিলগাও এবং ডেমরা অঞ্চলে ভূমিকম্প বেশী অনুভূত হয়। ঢাকাবাসী আতংকিত হয়ে পড়ে। ডেইলি স্টার পত্রিকায় প্রকাশিত (ডিসেম্বর ২৭,২০০৪)এক খবরে দু’জন প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা পাওয়া যায়- এদের মধ্যে একজন মহিলা যিনি উত্তরার অধবাসী। তিনি লক্ষ্য করেন যে তার পুরো রুমটি ভয়াবহ ভাবে কাঁপছে। ডেমরায় বসবাসকারী আরেক ভদ্রমহিলা, যিনি প্রাতঃভ্রমণ শেষে বাসায় ফিরছিলেন, বাসার কাছে এসে তিনি সভয়ে লক্ষ্য করেন যে তার দালানটি ডানে-বায়ে দুলছে। ঢাকায় পানিতে(নদী,পুকুর,লেক) ভূ-কম্পনীয় আলোড়ন লক্ষ্য করা গেছে।

২০০৬ ভূমিকম্প-নড়াইল:নড়াইল ভূমিকম্প নামেও পরিচিত। ২০০৬ সালের ৫ আগষ্ট রাত ৮ টা ৩৯ মিনিটে (বাংলাদেশ স্থানীয় সময়) এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিক্টারস্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.২ এবং উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার ১১০ কি.মি দক্ষিণ-পশ্চিমে নড়াইলের কাছে। কেন্দ্রের গভীরতা ছিল ১০ কি.মি। ঢাকাতে এই ভূমিকম্প বেশ জোরেশোরে অনূভূত হয় তাছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানেও এই ভূমিকম্প অনুভুত হয়। ঘরের ভিতর অবস্থানকারীরা বিশেষ ক উঁচু দালানে বসবাসকারীরা কম্পন বেশ ভালোভাবেই অনুভূব করে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য নামে চার তলা ভবনটি প্রবলভাবে দুলতে থাকে এবং এই দালানে বসবাসকারী ছাত্ররা আতংকে খোলা আকাশের নীচে অব®হান নেয়। সংশোধিত মার্কাল্লি স্কেলে এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৪ থেকে ৫ এর মধ্যে।

২০০৮ ভূমিকম্প-মানিকগঞ্জ:২০০৮ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ মিনিটে একটি কম মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকা ও এর আশে পাশের এলাকা কেঁপে উঠে। ঢাকার অধিবাসীদের মধ্যে ব্যপক আতংক ছড়িয়ে পড়ে। রিক্টারস্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩.৮ এবং কেন্দ্রের গভীরতা ছিল ৩৫ কি.মি। এপিসেন্টার ছিল ঢাকার ৪১ কি.মি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিমে মানিকগঞ্জে। ধারনা করা হয় মধুপুর ফল্টে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি। ১৮৮৫ সালের বেঙল ভূমিকম্পও এই মধুপুর ফল্টে উৎপন্ন হয়।

২০০৮ ভূমিকম্প-ময়মনসিংহ:ময়মনসিংহ ভূমিকম্প নামেও অধিক পরিচিত। ২০০৮ সালের ২৭ জুলাই মধ্যরাতে (রাত ১২ টা ৫১ মিনিট ৫০ সে.-বাংলাদেশ স্থানীয় সময়) এই ভূমিকম্প অনূভুত হয়। উপকেন্দ্রের অবস্থান ছিল এবং ঢাকার ১২০ কি.মি উত্তরে ময়মনসিংহ শহরে (ময়মনসিংহ শহরের ১২ কি.মি উত্তরপূর্বে।ময়মনসিংহ ছাড়াও এই ভূমিকম্প অনূভুত হয় ঢাকারবনানী,ধানমন্ডি,ইস্কাটন,যাত্রাবাড়ী,কাঁটাবন,লালমাটিয়া,মিরপুর,রাজাবাজার,শান্তিনগর এবং ওয়ারীতে।নিউ এইজ পত্রিকায় প্রকাশিত (জুলাই ২৮,২০০)এক রির্পোটে দেখা যায় ঢাকা বিশ^াবদ্যালয়ের মহসিন হল,জিয়াউর রহমান হল ও জগন্নাথ হলে অন্তত ২৫ জন ছাত্র আহত হয়। এদের মধ্যে অনেকে হলের উপরের তলা থেকে আতংকে লাফ দিয়ে গুরুতর আহত হয়। বিল্ডিং ভ’মিকম্পে প্রবলভাবে কাঁপতে থাকলে ঢাকাবাসী মধ্যরাতে আতংকে ঘুম থেকে জেগে উঠে। ভূমিকম্পের ®হায়িত্ব ছিল ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড। ঢাকায় মার্ক্কালি স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৫।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন